গাইবান্ধায় নতুন করে ৩০ গ্রাম প্লাবিত
গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আশা ঢলে গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বাড়তে থাকায় জেলার ৭ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন করে আরও ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বন্যায় জেলার ৭ উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নের প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বানভাসিদের মাঝে তীব্র খাবার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির কারণে বাঁধে আশ্রয় নেয়া মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। হুমকিতে পড়েছে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। করতোয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তা নদীর পানি অপরিবর্তিত অবস্থায় আছে।
জানা গেছে, করতোয়া নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুরু করেছে। গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর, গোবিন্দগঞ্জ,পলাশবাড়ী ও সাঘাটা উপজেলার ৩০টি গ্রাম নতুন করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। হুমকিতে রয়েছে গোবিন্দগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ। গোবিন্দগঞ্জের ফুলবাড়ী ইউনিয়নের শ্যামপুর ও পার্বতীপুর গ্রামের কয়েকটি পারিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। সাদুল্লাপুর উপজেলা ও পলাশবাড়ী উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে নষ্ট হয়েছে শত শত হেক্টর ফসলি জমি।
অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের অপ্রতিরোধ্য ভাঙনের ফলে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানী ইউনিয়নের গো-ঘাট গ্রামের সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরটি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের তীব্রতা এত বেশি যে, মন্দিরটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ারও সময় পাওয়া যায়নি। ফলে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে গ্রামের প্রাচীন দুর্গা মন্দিরটিও। গত সাতদিনের ভাঙনে গ্রামটির প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
স্থানীয় কলেজছাত্র আব্দুল মালেক জানান, নদী ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে এলাকার স্লুইস গেট, উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কামারজানি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, বন্দর, কামারজানি মার্চেন্ট হাইস্কুলসহ অন্তত পাঁচশ পরিবারের বাড়িঘর ও ফসলি জমি।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দফায় দফায় বৃষ্টির কারণে নদীর পানি বাড়ছে। আর এ কারণে এবার বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে।
তিনি বলেন, সদর উপজেলার কামারজানির গো-ঘাট গ্রাম নদী ভাঙন কবলিত এলাকা। এই এলাকার ভাঙনরোধে পাউবো প্রতিরক্ষামূলক কাজ করলেও তাতে ভাঙন ঠেকানো সম্ভব হয়নি। শুকনো মৌসুমে আবার কাজ শুরু করা হবে। গত ২১ জুলাই একনেকে ৪০১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাস হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এই এলাকার মানুষ ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে।
চিত্রদেশ//এস//