গভীর নিম্নচাপটি এখন ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’
স্টাফ রিপোর্টার:
বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপটি শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এ রূপ নিয়েছে। এটির কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ওঠে যাচ্ছে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত।
আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান খান সোমবার (২৪ মে) সকালে জানিয়েছেন, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এ পরিণত হয়ে একই এলাকায় (১৬.৬ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৫ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
এটি সোমবার (২৪ মে) সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৭৫ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিমি দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬০৫ কি. মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। ইয়াস আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি. মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
এই অবস্থায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া অফিস (আইএমডি) ও সাইক্লোন সেন্টার জানিয়েছে, সোমবার সকালে গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। ২৬ মে সকালের দিকে ইয়াস পৌঁছাবে উড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে। আর সেদিন দুপুরের দিকে এটি উপকূল অতিক্রম করবে। এ সময় ইয়াসের কেন্দ্রে বাতাসের গতি ওঠে যাবে ১৮০ কিমি পর্যন্ত।
বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চলেও পড়বে ইয়াসের প্রভাব। ফলে দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখাসহ অন্যান্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস (yaas) এটি একটি পার্সিয়ান শব্দ, যার ইংরেজি হচ্ছে জেসমিন। বাংলায় যাকে বলা হয় জুঁই ফুল। এই নামটি দিয়েছে ওমান।
আইএমডি জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা বিশেষ করে উত্তর-দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, মালদাহ, দিনাজপুর, শিলিগুড়ি, দিনাজপুর, সিকিম, দার্জিলিং প্রভৃতি স্থানে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হবে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিসও মঙ্গলবার (২৫ মে) থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়ার কথা জানিয়েছে।
২০২০ সালের মে মাসে একই দিক থেকে হানা দিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় আম্পান। তবে সেটি পশ্চিমবঙ্গসহ দক্ষিণ ভারতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে গেলেও বাংলাদেশে ঢোকে শক্তি হারিয়ে।
চিত্রদেশ//এস//