
গণভোট কী
নিউজ ডেস্ক
আবারও আলোচনায় গণভোট— ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় জনমত গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো গণভোট। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কোনও বিষয়ের ওপর জনগণের সমর্থন আছে কিনা—তা যাচাইয়ের জন্য যে ভোট অনুষ্ঠিত হয় তাকে গণভোট বলে। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’ ব্যালটে সিল দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের সংবিধানে গণভোট নিয়ে কী আছে?
জাতিসংঘের সংবিধান প্রণয়ন সংক্রান্ত নথি এবং দেশের আগের ভোটগুলোর ধরন পর্যালোচনার ভিত্তিতে বলা যায়- সংবিধান প্রণয়ন কিংবা সংশোধন, কোনো আইন তৈরি বা বাতিল এবং শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে জনগণের মতামত চাওয়া হয়। গণমানুষের মতামতের প্রতিফলন ঘটানোর উদ্দেশ্য থাকে বিধায় এই প্রক্রিয়া গণভোট নামে পরিচিত।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে থাকা ‘রেফারেন্ডাম ইন কনস্টিটিউশন মেকিং প্রসেস’ নামের নিবন্ধে বলা হয়েছে, সংবিধান গ্রহণ বা সংশোধনের জন্য আয়োজিত গণভোট, অর্থাৎ সংবিধানগত গণভোট হলো গণভোটের প্রধান ধরনগুলোর একটি। ১৯৮০-এর দশকের শেষ দিকে বিশ্বের ৫০ শতাংশেরও বেশি লিখিত সংবিধানে কোনো না কোনোভাবে গণভোটের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
বাংলাদেশে এর আগে হওয়া গণভোটগুলোতে ভোটারেরা ভোটদানের পদ্ধতি হিসেবে ‘হ্যাঁ’ ও ‘না’ এই দুটি শব্দকে বাছাই করেছেন।
জাতিসংঘ বলছে, ১৯৮৯ সালের পর রাজনৈতিক রূপান্তর ও সাংবিধানিক পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় বিশ্বব্যাপী গণভোট ব্যবহারের হার বৃদ্ধি পায়। এর ফলে সংবিধান সংশোধন বা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে গণভোটের সংখ্যা বেড়ে যায় এবং বিশ্বের বহু সংবিধানে এ সংক্রান্ত বিধান যুক্ত হয়।
বাংলাদেশের সংবিধানে গণভোটের বিধান যুক্ত হয় দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। পরে সেটি পঞ্চদশ সংশোধনীতে বাতিল করা হয়। চলতি বছরের জুলাইয়ে হাইকোর্ট এক রায়ে সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর ১৪২ অনুচ্ছেদে গণভোটের বিধান পুনর্বহাল করেছেন।
বাংলাদেশে এ পর্যন্ত তিনটি গণভোটের কথা জানা যায়। দুটি প্রশাসনিক গণভোট আর একটি সাংবিধানিক গণভোট। প্রথম প্রশাসনিক গণভোট হয় ১৯৭৭ সালে। লক্ষ্য ছিল প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসন কার্যের বৈধতা দান। এতে ফলাফল ৯৮.৮০ শতাংশ ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়েছিল। দ্বিতীয় প্রশাসনিক গণভোট ১৯৮৫ সালে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সমর্থন যাচাইয়ের লক্ষ্যে ‘হ্যাঁ’ ‘না’ ভোট। ফলাফল ৯৪.১৪ শতাংশ ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়েছিল। আর তৃতীয়টি সাংবিধানিক গণভোট অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯১ সালে। সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী আইন প্রস্তাবের বিষয়ে—যার ফলাফল ৮৪.৩৮ শতাংশ ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়েছিল।
আওয়ামী লীগ আমলে ২০১১ সালে সংবিধান থেকে গণভোটের বিধান বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল।





