কোরবানির হাট সংক্রমণের বাজার
স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীসহ সারা দেশের কোরবানির পশুর হাটগুলোতে করোনার স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা ভয় বাড়াচ্ছে। এরই মধ্যে ঢাকার হাটগুলোতে বেশ কয়েকজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। কোরবানির হাটগুলো হয়ে ওঠেছে যেন সংক্রমণের বাজার।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে গরুর হাটের মাধ্যমে করোনার বিস্তার ঘটে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। তারা বলছেন, বিশেষ করে রাজধানীর কোরবানির হাটে সারা দেশের ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়েছে। তারা শহর থেকে ভাইরাস নিয়ে গ্রামে যাবেন। আবার শহরের মানুষও পশুর হাট থেকে করোনা বাসায় নিয়ে যাবে। সামগ্রিক বিষয়টি উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা না গেলে পরিস্থিতিটা আরো খারাপের দিকে যাবে।
ব্রাক জানায়, ঢাকার ৯টি কোরবানির পশুরু হাটে তাদের স্থাপিত করোনা সুরক্ষা কর্নারে অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় দুই দিনে ৬জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। রোববার বিকেল পর্যন্ত ৩৬ জনের করোনার অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করে ৪ জনের শরীরে করোনা সনাক্ত হয়। শনিবার ৫৬ জনের অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় দুজন শরীরে করোনা শনাক্ত হয়।
এদিকে রাজধানীসহ সারা দেশের শুর হাটগুলো ক্রেতা-বিক্রেতায় পরিপূর্ণ গেছে। কেউ কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করার বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়।
কোরবানির হাটের এমন পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রোববার ভার্চুয়াল বুলেটিনে অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, যেখানে জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি জড়িয়ে আছে, সেখানে আমাদের উদ্বেগের বিষয়টি বরাবরই বলি।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমরা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দিয়েছি। যেহেতু কোরবানির পশুরহাটগুলো স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেখভাল করা হয়, আমরা জানি বিষয়টি নিয়ে তারাও নজরদারিতে আছেন। ক্রেতা-বিক্রেতা সবারই সচেতনতা ও দায়িত্ব বোধের বিষয়টি আমরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।
ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসকদের নেতৃত্বে মনিটরিং টিম আছে। তারা তাদের মতো করে দেখভাল করছেন। আমরা বিশ্বাস করি, প্রত্যেকেই আমরা দায়িত্বশীল নাগরিক। দায়িত্বের জায়গাটি তাদের মনে করিয়ে দেওয়া এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের প্রত্যেকেরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। যে যার জায়গা থেকে প্রত্যেকের ভূমিকাটি যদি আমরা যথাযথভাবে পালন করি, তাহলে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি আরেকটু ভালোভাবে মেনে চলা সম্ভব।
এদিকে রাজধানীর কোরবানির হাটের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। হাটে স্বাস্থ্যবিধি না মানা হলে সেই হাট বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও হুশিয়ারি করেন তিনি।
ভাটারার সাইদ নগর হাট পরিদর্শনে গিয়ে রোববার মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন,প্রতিটি হাটে পাঁচ জন করে কাউন্সিলর দায়িত্বে আছেন। স্বাস্থ্যবিধি মানতে না দেখলে তাদেরকে বলুন। তাদের বিরুদ্ধেও কোনো অভিযোগ থাকলে আমাদের অ্যাপে জানান। নয়টি হাটের জন্য ডিএনসিসির তিনটি ভ্রাম্যমাণ আদালত রয়েছেন। হাটে স্বাস্থ্যবিধি না মানা হলে সেই হাট বন্ধ করে দেওয়া হবে। এবার আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে খুব কঠোর।
চিত্রদেশ//এফটি//