প্রধান সংবাদ

কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে ‘পরিকল্পনা’ পেশ করুন: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার:
কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে জাতীয় মাত্রা নির্ধারণের জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই তাদের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) জানাতে হবে। পাশাপাশি জাতীয় কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অভিযোজন বাস্তবায়ন করতে হবে।

সোমবার কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস (কপ২৬) সম্মেলনের ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনের ২৬তম অধিবেশনে জাতীয় বিবৃতি দেওয়ার সময় তিনি চারটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

কার্বন নির্গমন হ্রাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে- দেশের এনডিসি আপডেট, ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি বিনিয়োগে ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল এবং ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে শক্তির ৪০ শতাংশ নেওয়া।

প্রায় ২০০টি দেশ কপ২৬-এ অংশ নিচ্ছে এবং দেশগুলোকে তাদের এনডিসি (পরিকল্পনা) জমা দিতে বলা হচ্ছে, যা নির্গমন হ্রাসে প্যারিস চুক্তির মূল বিষয় ছিল।

দ্বিতীয় প্রস্তাবটি উত্থাপন করে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) ও ভি২০ (দ্য ভালনারেবল২০) এর সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত দেশগুলোর উচিত অভিযোজন এবং প্রশমনের মধ্যে ৫০ অনুপাত ৫০ ভারসাম্য রেখে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণ করা।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও আয়োজক দেশ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা / ছবি- সংগৃহীত
তৃতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোর উচিত, সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোতে সাশ্রয়ী মূল্যে পরিচ্ছন্ন ও সবুজ প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেওয়া এবং সিভিএফ দেশগুলোর উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তাও বিবেচনা করা।

প্রধানমন্ত্রী তার চতুর্থ ও চূড়ান্ত প্রস্তাবে বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদী ভাঙন, বন্যা এবং খরার কারণে বাস্তুচ্যুত জলবায়ু অভিবাসীদের জন্য বিশ্বব্যাপী দায়বদ্ধতা ভাগ করে নেওয়াসহ লোকসান ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি অবশ্যই সমাধান করতে হবে।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী নির্গমনের দশমিক ৪৭ শতাংশেরও কম অবদান রাখার পরও বাংলাদেশ জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ২০০৯ সালে ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড’ প্রতিষ্ঠা করে। গত সাত বছরে আমরা জলবায়ু সম্পর্কিত ব্যয় দ্বিগুণ করেছি।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তার সরকার যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে আমরা জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা প্রস্তুত করছি। সম্প্রতি আমরা একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও যুগোপযোগী এনডিসি জমা দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম বিস্তৃত সৌরশক্তি কার্যক্রম। আমরা আশা করি, ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আমাদের ৪০ শতাংশ জ্বালানি থাকবে। আমরা ১২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করেছি।

‘সিভিএফ-কমনওয়েলথ হাই-লেভেল ডিসকাশন অন ক্লাইমেট প্রসপারিটি পার্টনারশিপ’ শীর্ষক আলোচনায় ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী / ছবি-সংগৃহীত
তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, সরকার ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। এটি জলবায়ুর ঝুঁকি থেকে টেকসই ও জলবায়ু সমৃদ্ধির পথে যাত্রা।
তিনি বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ মিয়ানমারের নাগরিক বা রোহিঙ্গাদের কারণে জলবায়ু প্রভাবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে।

জলবায়ু ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এবং ভি-২০-র সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ ৪৮টি দেশের স্বার্থ প্রচার করছি। গ্লোবাল সেন্টার অব অ্যাডাপ্টেশনের ঢাকার দক্ষিণ এশিয়া অফিসের মাধ্যমে আমরা আঞ্চলিকভাবে সর্বোত্তম অনুশীলন এবং অভিযোজন অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে চলেছি। তিনি বলেন, সিভিএফের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ একটি জরুরি জলবায়ু চুক্তির চেষ্টা করছে। সূত্র- বাসস

চিত্রদেশ//এফটি//

Related Articles

Back to top button