গল্প-কবিতা

কানিজ কাদীরের ভ্রমণ কাহিনি ‘মাদুরাই’ (পর্ব-২০)

রুমে আসলাম দুপুর দেড়টার দিকে। রাফিজা ও রকিবুল ফোন দিল ক্যাফেটেরিয়ায় যাওয়ার জন্য। আজই আমাদের এখানে শেষ দুপুরের খাওয়া। ক্যাফেটেরিয়াতে খাওয়া বেশ এনজয় করতাম। অনেক ধরনের খাবারই থাকতো। কিন্তু সব খেতে পারতাম না গন্ধের জন্য। যখন যেটা একটু ভাল লাগতো সেটা দিয়েই খেতাম। তবে প্রতিদিন টক দইটা বেশ লাগতো। দুপুরের ভাত বেশ কমই খেলাম। কারণ কিছুক্ষণ আগেই কেক, পেটিস ও ড্রিংক খেয়ে এসেছি। পনে চারটায় আউটপেশেন্ট ব্লকে যেতে হবে সার্টিফিকেট আনার জন্য। রুমে এসে
কতক্ষণ রেস্ট নিলাম। টিভি দেখলাম। এদের পুরনো ছবির গান ও দৃশ্যগুলো আমার বেশ ভালই লাগে।পনে চারটার দিকে আউট প্যাশেন্ট ব্লকে যেয়ে চন্দ্রা কে রুপি দিয়ে বললাম কিছু মিষ্টি খাবার আনানোর জন্য । কারণ আমি এখানকার দোকান তেমন চিনি না। চন্দ্রা নিজেই মিষ্টি খাবার আনার জন্য চলে গেল। এদিকে বিজয়লক্ষী ম্যাডাম আমাকে দেখে দু’কাপ কফি আনালেন। আমার সাথে বসে কফি খেলেন। নানা কিছু জিজ্ঞেস করলেন। উনার আন্তরিক ব্যবহার দেখে আমার বেশ ভাল লাগলো।
কিছুক্ষণের মধ্যে চন্দ্রা হাতে খাবারের প্যাকেট নিয়ে ঢুকলো। কিছুক্ষণ পরে ম্যাডাম আমার হাতে সার্টিফিকেট তুলে দিলেন। চন্দ্রা প্রথমেই উনার ক্যামেরায় ছবি তুললেন। আমি আমার ক্যামেরায় চন্দ্রাকে দিয়েই কয়েকটা ছবি তুললাম। ম্যাডামকে আমার কেনা মিষ্টি খেতে দিলাম। বিদায়ের আগে ম্যাডাম ও চন্দ্রা এর জন্য কেনা গিফট দুটো দিয়ে বিদায় সম্ভাষণ জানিয়ে বের হয়ে এলাম। বেশ শান্তি লাগছিল। শেষ পর্যন্ত ট্রেনিংটা শেষ হলো। এতদিন সবাইকে ছেড়ে কোন দিন দূরে একা থাকি নাই। তাছাড়া আম্মার স্মৃতি আমাকে সবসময়ই কষ্ট দিচ্ছিল। মানুষ তার জীবনের সমস্ত শ্রম একটা সংসার, সন্তান, স্বামীর পিছনে নিজেকে একেবারে নিবেদন করার জন্যই যেন এ পৃথিবীতে এসেছিলেন। এখানে এসে কত কিছু কিনলাম। অথচ আম্মার জন্য কিছুই কিনতে পারলাম না।সবার জন্য সবকিছু গুছিয়ে দিয়েই যেন আমার ‘মা’ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন । এসব কথা ভাবতে গেলেই আমার ভিতরটা ডুকরে কেঁদে উঠছে। নিজেকে সামলাতে কষ্ট হয়। আমার ‘তিজী’-নাসিফের কথা খুব মনে হয়। ওদেরও নিশ্চয়ই মা এর জন্য অনেক অনুভূতি কাজ করে। (চলবে)

 

Related Articles

Back to top button