কানিজ কাদীরের ছোট গল্প ‘করোনাময় দিনগুলি’ (৭ম পর্ব)
১২ তারিখ(জুলাই,২১) হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্তটা একটা বুদ্ধিমানের কাজ হয়েছে। ১২ তারিখ রাতটা ভীষণ খারাপ গেছে। ডাক্তার সাহেব প্রায় অচেতনের মত ছিলেন। তাঁর দিকে তাকিয়ে আমার বেশ কষ্ট হচ্ছিল। মুখ টা শুকিয়ে শুধু নাকের শিড়দাড়াটা দেখা যাচ্ছিল। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া ঠিক সময়ে হাসপাতালে ভর্তি করতে পেরেছি, হাসপাতালে সিট পাওয়া গেছে। ৬দিনে দেড় লাখ টাকা বিল দিয়ে আসতে হলো ল্যাবএইডে। বুঝতে পারলাম জীবনের কাছে টাকা পয়সা কিছুই না। আমরা শুধু শুধুই এর পিছনে ছুটছি।আমরা ৫ রাত ৬দিন হাসপাতালে ছিলাম। ল্যাবএইডের সার্ভিস আমার কাছে বেশ ভাল মনে হয়েছে। ডাক্তার নার্স অন্যান্য সবার সার্ভিস ভাল। নার্সগুলো খুব এক্সপার্ট। ১৭ জুলাই দুপুরে আমাদের ছুটি হলো।ডাক্তার, নার্সদের ধন্যবাদ জানিয়ে কেবিন থেকে বের হলাম। নাসিফ আমাদের সাথে ছিল। অবশেষে মনে হলো করোনা যুদ্ধ বিশেষ জয়ী হয়ে বাসায় আসলাম।
১৮ জুলাই সকালে আমরা আইইডিসিআর থেকে লোক ডেকে আবার করোনা টেস্ট দিলাম। ১৯/৭/২১ আমার রিপোর্ট নেগেটিভ আসলো। আমার কাছে মনে হলো আমি একটা শৃঙখল থেকে মুক্ত হলাম। কিন্তু শরীরটা তখনও কেমন যেন লাগছিল, মুখেও কোন খাবার ভাল লাগছিল না। এদিকে ডাক্তার সাহেবকে একগাদা ওষুধ দিয়েছে। বেশ কিছুদিন খেতে হবে। আমিই সকাল, দুপুর, বিকালের ওষুধ দেখে দেখে দিচ্ছি। এত ওষুধ যে খেতে হলো যা আমি জীবনেও দেখি নাই। ডাক্তার সাহেবের রিপোর্ট আবার পজিটিভ (ফলস) এসেছে। অতএব এখনও উনাকে ঘরেই থাকতে হলো মনের খুতখুতির জন্য। আর নাতনী নাবিহাকে কোলে নেয়ার বাসনাও কষ্ট করে ত্যাগ করতে হলো। আর আমি করােনা নেগেটিভ হওয়ার সাথে সাথে নাতনীকে কোলে নিয়ে মনের তৃপ্তি মেটালাম। (চলবে)
লেখক: কানিজ কাদীর