করোনা রোধে ২১ মার্চ থেকে পুলিশের কার্যক্রম শুরু : আইজিপি
স্টাফ রিপোর্টার:
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রকোপ গত মাস পর্যন্ত কম থাকলেও মার্চ থেকে এটি বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। তিনি মানুষকে মাস্ক না নিয়ে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সকালে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে কোভিড-১৯ দ্বিতীয় ধাপ মোকাবিলায় দেশব্যাপী পুলিশের উদ্যোগ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ২১ মার্চ থেকে বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে মাস্ক পরা উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। পুলিশের এই কার্যক্রমের স্লোগান- ‘মাস্ক পরা অভ্যেস, কোভিড মুক্ত বাংলাদেশ।’
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, গত এক বছরের মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে সবচেয়ে কম আক্রান্ত ছিল। মার্চে আবার ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৬ লাখ মানুষ টিকা নিয়েছেন, তবে এটা প্রথম ডোজ। এক ডোজে করোনা প্রতিরোধ সম্ভব না, দুই ডোজ লাগে। অবহেলা ও অবজ্ঞা করে করোনা থামানো যাবে না।
তিনি বলেন, সবাইকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। মাস্ক পরতে হবে, সাবান দিয়ে বারবার হাত ধুতে হবে, প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। জনসমাগম বা ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় গেলে সেখান থেকে বাসায় ফিরে কাপড় খুলে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে জনগণকে মাস্ক পরতে বাধ্য করা হবে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, আমরা ঠিক ‘বাধ্য’ কথাটা বলছি না। আমরা তাদের প্রেষণা ও প্রেরণা দিয়ে মাস্ক পরতে উদ্বুদ্ধ করতে চাই। তাছাড়া মাস্ক পরতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে কেন? মানুষ নিজের দায়িত্ববোধ থেকে নিজের ও নিজের পরিবারের জন্য মাস্ক পরবে বলে আশা করছি।
বড় রাজনৈতিক অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিলসহ সমাগম হয় এমন নানা অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয় পুলিশ। করোনার কারণে অনুমতি দেয়া বন্ধ থাকবে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, অনুমতি দেয়ার বিষয়টি পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। আমরা অনুমতি দিলেও প্রতিটি অনুষ্ঠানে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। তবে বেপরোয়াভাবে মাস্ক ছাড়া ঘোরাফেরা করতে থাকলে করোনা পরিস্থিতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দেশবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, করোনার যে স্বাস্থ্যবিধি রয়েছে সেগুলো অবশ্যই মানতে হবে। বাইরে গেলে মাস্ক পরতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
আইজিপি আরও বলেন, করোনা মোকাবিলায় পুলিশ জনগণের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছে। পুলিশ সদস্যরা মরদেহ সৎকার করেছে। খাবার বিতরণ করেছে। এ পর্যন্ত পুলিশের ৮৭ জন সদস্য করোনায় মৃত্যুবরণ করেছে। আক্রান্ত হয়েছে ২০ হাজারের অধিক সদস্য।
করোনার দ্বিতীয় ধাপ মোকাবিলায় দেশব্যাপী পুলিশের উদ্যোগ
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশ পুলিশের নির্দেশিকা (এসওপি) বিতরণ; পুলিশের লোগো সম্বলিত ফ্রি মাস্ক বিতরণ; করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণ; সচেতনতামূলক মাইকিং, লিফলেট ও পোস্টার বিতরণ; সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখা; করোনায় মৃত্যুবরণকারীদের দাফন; পুলিশের অব্যবহৃত স্থাপনা আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রূপান্তর।
এছাড়াও ইমিগ্রেশন পুলিশের মাধ্যমে বিদেশ থেকে আগত ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ ও কোয়ারেন্টাইনে প্রেরণ; জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে করোনা সংক্রান্ত আগত কলের সাড়াদান; পুলিশ হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করে কোভিড পরীক্ষা ও চিকিৎসা প্রদান; পুলিশ হাসপাতালে পুলিশ ব্যতীত অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের চিকিৎসা সেবা প্রদান।
চিত্রদেশ//এফ//