ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে পুলিশের একগুচ্ছ পরামর্শ
নিজস্ব প্রতিবেদক
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে উদযাপনের লক্ষ্যে নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় একগুচ্ছ পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।
বুধবার সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) ইনামুল হক সাগরের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ পরামর্শের কথা জানানো হয়।
ঈদ ও পহেলা বৈশাখের ছুটি: লাখো পর্যটক বরণে প্রস্তুত কক্সবাজার
১. পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ঈদের ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন। ভ্রমণকালে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় রাখুন।
২. চালককে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাতে তাগিদ দেবেন না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাসের ছাদে কিংবা ট্রাক, পিকআপ ও অন্যান্য পণ্যবাহী যানবাহনে ভ্রমণ করবেন না।
৩. রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে জেব্রা ক্রসিং অথবা ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করুন। যেখানে জেব্রা ক্রসিং বা ফুট ওভারব্রিজ নেই সেখানে যানবাহনের গতিবিধি দেখে নিরাপদে রাস্তা পার হউন। প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নিন।
৪. ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বেপরোয়া গতিতে কিংবা ‘জয় রাইডিং’ করবেন না। এতে জীবন বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
৫. অপরিচিত কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে খাবার খাবেন না।
বাস মালিকদের জন্য পরামর্শ
১. অদক্ষ, অপেশাদার, ক্লান্ত বা অসুস্থ চালককে যাত্রীবাহী বাস ও গাড়ি চালাতে না দেয়া।
২. চালক যাতে নিয়ম মেনে গাড়ি চালায় এবং ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং না করে সে জন্য চালককে নির্দেশ দেয়া।
৩. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী উঠানো যাবে না।
৪. ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় বের করা যাবে না।
বাস চালকদের জন্য পরামর্শ
১. ওভার স্পিডে গাড়ি চালাবেন না, ঝুঁকিপূর্ণ ওভার টেকিং করবেন না।
২. ক্লান্তি বা অবসাদ বা অসুস্থ অবস্থায় গাড়ি চালাবেন না।
৩. ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সবসময় সঙ্গে রাখুন।
৪. আঞ্চলিক সড়ক/মহাসড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে পুলিশের নির্দেশনা মেনে চলুন।
লঞ্চ/স্টিমার/স্পিডবোটের যাত্রীদের জন্য পরামর্শ
১. জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে নৌযানে উঠবেন না।
২. নৌযানের ছাদে যাত্রী হয়ে ভ্রমণ করবেন না।
৩. দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌযানে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন।
৪. যাত্রাপথে ঝড় দেখা দিলে এদিক ওদিক ছোটাছুটি না করে নিজের জায়গায় অবস্থান করুন।
৫. স্পিডবোটে ভ্রমণের ক্ষেত্রে লাইফ জ্যাকেট পরিধান করুন।
লঞ্চ/স্টিমার/স্পিডবোট মালিকদের জন্য পরামর্শ
১. নির্ধারিত সংখ্যক ও নির্ধারিত গ্রেডের মাস্টার ও ড্রাইভার দ্বারা নৌযান পরিচালনা করুন।
২. দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নৌযানের চলাচল বন্ধ রাখুন।
৩. নৌযানের মাস্টার ব্রিজে যাত্রী সাধারণের অবাধ চলাচল বন্ধ করার জন্য দুইপাশ অস্থায়ীভাবে বন্ধ করার ব্যবস্থা করুন। লঞ্চে পর্যাপ্ত বয়া রাখুন।
লঞ্চ/স্টিমার/স্পিডবোট চালকদের জন্য পরামর্শ
১. আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নৌযান নিয়ে বন্দর ত্যাগ করুন।
২. ডেকের ওপর যাত্রীদের বসার স্থানে মালামাল পরিবহন থেকে বিরত থাকুন।
৩. পর্যাপ্ত সংখ্যক বয়া/লাইফ জ্যাকেট নৌযানে রাখুন।
৪. যাত্রাপথে ঝড়ের আশঙ্কা দেখা দিলে নৌযানকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিন বা তীরে ভিড়িয়ে রাখুন।
৫. নৌযানে মোবাইল ফোন ও রেডিও রাখুন এবং নিয়মিত আবহাওয়ার বুলেটিন শুনুন। প্রয়োজনে আবহাওয়া সংক্রান্ত অ্যাপ ব্যবহার করুন।
৬. বৈধ কাগজপত্রবিহীন নৌযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকুন।
৭. সব ফায়ার পাম্প ও অগ্নি নিরোধক যন্ত্রপাতির সঠিকতা নিশ্চিত করুন।
৮. দুর্ঘটনাকবলিত নৌযান শনাক্তকরণের লক্ষ্যে নৌযানগুলোতে ১০০-১৫০ ফুট লম্বা দড়ি সম্বলিত বয়া এবং লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা রাখুন।
ট্রেন যাত্রীদের জন্য পরামর্শ
১. ট্রেনের ছাদে, বাফারে, পাদানিতে ও ইঞ্জিনে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন।
২. ট্রেনে ভ্রমণের সময় পাথর নিক্ষেপ সম্পর্কে সতর্ক থাকুন।
৩. ট্রেনে ভ্রমণকালে মালামাল নিজ দায়িত্বে রাখুন। বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন।
গুজবে বিভ্রান্ত না হয়ে যে কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে পুলিশকে জানান। প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করুন। প্রয়োজনে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কন্ট্রোল রুমে ০১৩২০০০১২৯৯, হাইওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ০১৩২০১৮২৫৯৮, রেলওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ০১৩২০১৭৭৫৯৮, নৌপুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ০১৩২০১৬৯৫৯৮, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ০১৭৭৭৭২০১৯৯ নম্বরে এবং জেলা পুলিশ সুপার ও থানার অফিসার ইনচার্জের (ওসি) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
//এস//