অপরাধ ও আইনপ্রধান সংবাদ

আড়াই বছরে ১১ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেন সাহেদ

স্টাফ রিপোর্টার:
রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ প্রতারণার মাধ্যমে আড়াই বছরে ১১ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছেন। এ অভিযোগে মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় সাহেদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করেছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)।

মঙ্গলবার রাতে সিআইডি জানায়, প্রতারক সাহেদ ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারী আকার ধারণ করলে ভুয়া পরীক্ষা এবং জালসনদ প্রদানের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ৩ কোটি ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এ প্রতারণায় সাহেদের মূল সহযোগী মাসুদ পারভেজ। প্রতারণার জন্য সাহেদ ও মাসুদ পারভেজ রিজেন্ট ডিসকভারি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের নামে মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ঢাকার শাহ মখদুম এভিনিউ শাখায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি নতুন অ্যাকাউন্ট খোলেন। এ হিসাবটি পরিচালনা করতেন সাহেদের বাবা সিরাজুল করিম ও এমডি মাসুদ পারভেজ।

সিআইডির অনুসন্ধানে অভিযুক্ত মো. সাহেদের অর্জিত সম্পদের প্রধান উৎস প্রতারণা ও জালিয়াতি মর্মে বেরিয়ে আসে। অপরাধলব্ধ আয় লেনদেনের সুবিধার্থে সাহেদ রিজেন্ট হাসপাতাল, রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেড ও অন্যান্য অস্তিত্ববিহীন ১২টি প্রতিষ্ঠানের নামে ৪৩টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করেছেন। এসব হিসাবসমূহ খোলার সময় কেওয়াইসি ফরমে তিনি প্রতিষ্ঠানসমূহের চেয়ারম্যান বা স্বত্বাধিকারী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানসমূহের এমডি মাসুদ পারভেজ সাহেদের পক্ষে হিসাবসমূহ প্রত্যক্ষভাবে পরিচালনা করেছেন।

হিসাবসমূহের লেনদেন পর্যালোচনায় সিআইডি দেখতে পায়, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নগদ টাকা জমা করা হয়েছে। সাহেদ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৪৩টি ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে ৯১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। তার মধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে ৯০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে তার হিসাবসমূহে বর্তমান স্থিতির পরিমাণ ২ কোটি ৪ লাখ টাকা; যার মধ্যে ৮০ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে। মাসুদ পারভেজের ১৫টি ব্যাংক হিসাবে মোট জমা ৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। তার হিসাব থেকে মোট উত্তোলনকৃত অর্থের পরিমাণ ৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আর হিসাবে বর্তমান স্থিতি ৫ হাজার টাকা।

সিআইডির সহকারী পুলিশ কমিশনার জিসানুল হক জানান, প্রতারণা, জালিয়াতি ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মঙ্গলবার সাহেদ ও মাসুদ পারভেজসহ ৬-৭ জন অজ্ঞাত সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তিনি জানান, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত ১১ কোটি দুই লাখ ২৭ হাজার ৮৯৭ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন।

চিত্রদেশ//এল//

Related Articles

Back to top button