বিনোদন

হলুদ ফুলে ভাসছে দিনাজপুরের মাঠ

দিনাজপুর প্রতিনিধি:
সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে ভাসছে দিনাজপুরের বিভিন্ন মাঠ। এ যেন এক হলুদের মেলা বসেছে। চোখ যে দিকে যায় সেদিকেই দেখা যায় সীমান্ত জুড়ে হলুদ ফুলের মাঠ। জেলার ১৩টি উপজেলায় বিভিন্ন মাঠে এখন চোখ জুড়ানো হলুদ রঙের সমারোহ। মৌমাছি যেন এ ফুল থেকে ঐ ফুলে বসতে ব্যস্ত। যা প্রকৃতিতেও ভিন্নমাত্রা এনে দিয়েছে। সরিষা ক্ষেতের আইল দিয়ে হেঁটে চলা কৃষাণী অথবা শিশুর দল অন্যরকম চিত্র সৃষ্টি করছে।

এতে চলতি জেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। বিভিন্ন গ্রামের সরিষা চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এবার প্রতি বিঘা জমি থেকে ৬-৭ মণ সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।

চাষীরা জানান, এবার তাদের উদ্বুদ্ধ করার কারণে এ বছর জেলায় সরিষার আবাদ ভাল হয়েছে। জেলায় এবার বারি ১৪, বারি ১৫ জাতের সরিষা বেশি আবাদ হয়েছে। শীতের সরিষার তেমন ক্ষতি হয় না। আমন ধান কাটার পর জমি চাষ করে এই সরিষার চাষ করা হয়। আবার সরিষা কাটার পর সেই জমিতেই ইরি বোরো আবাদ করা হবে। এখন সষিরার হদুল ফুলে ফুলে ভরে গেছে। দিনাজপুর জেলার ১৩ টি উপজেলাতেই এই সরিষার আবাদ করা হয়েছে। দিনাজপুর জেলায় এ বছর ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সদরের সরিষাচাষী হরিদাস রায় জানান, প্রতিবিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা। প্রতিমণ সরিষা বিক্রি করা যায় দেড় হাজার টাকা করে। প্রতি বিঘাতে ৭ মণ সরিষা উৎপাদন হলে বিঘা প্রতি ৭ হাজার টাকা লাভ করা যায়। এ ছাড়া সরিষা আবাদে তেমন সেচের প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া মাত্র ২ মাস সময়ে সরিষা আবাদ করা যায়। সরিষার বড় শত্রু জাব পোকা। এবার জাব পোকার আক্রমণ না থাকার কারণে সরিষার ফলন ভাল হয়েছে।

খামারপাড়া ইউনিয়নের ভান্ডারদহ গ্রামের সরিষা চাষী আফসার আলী বলেন, নিজের প্রয়োজন মেটাতে প্রতি বছর ১ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করি। এবার ২ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। আশা করছি অন্য বছরের তুলনায় এবার সরিষার ফলন ভালো হবে। নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে ১২-১৫ হাজার টাকার সরিষা বিক্রি করতে পারব।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক মো. তৌহিদুল ইকবাল জানান, কৃষি বিভাগ থেকে এ বছর সরিষা চাষীদের উদ্বুদ্ধ করার কারণে এ বছর জেলায় সরিষার আবাদ ভাল হয়েছে। শীতের সরিষার তেমন ক্ষতি হয় না। এছাড়াও সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি চাষ করলে ১৫ থেকে ২০ ভাগ ফলন বেড়ে যাবে। রবিশস্য চাষের এবার অনুকূল পরিবেশ ছিল। এমন প্রাকৃতিক পরিবেশ পেলে মানুষ সরিষা আরও বেশি করে আবাদ করবে। কৃষকদের অল্প সময়ে এই সরিষা চাষের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে দুই ফসলি জমি তিন ফসলি জমিতে রূপান্তরিত হচ্ছে।

 

চিত্রদেশ //এস//

Related Articles

Back to top button