অর্থ-বাণিজ্যপ্রধান সংবাদ

সবজির দাম কমছেই না

স্টাফ রিপোর্টার:
দীর্ঘমেয়াদি বন্যা ও বৃষ্টির কারণে দেশজুড়ে বিপুল পরিমাণ সবজি নষ্ট হওয়ায় বাজারে দামের যে ঊর্ধ্বগতি তা আর কমেনি। দীর্ঘমেয়াদে সব ধরনের সবজির এই উচ্চমূল্য ভোক্তা সাধারণকে ভীষণ বিপাকে ফেলেছে। দুই মাস ধরে বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কেজি প্রতি ৬০ টাকার ওপরে। কোনটির দাম কেজি প্রতি ১০০ টাকা। কিছু শীতকালীন সবজি এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করলেও কেজি প্রতি দাম প্রায় দেড়শ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্যা দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় নতুন করে সবজি চাষ করা যাচ্ছে না। যেসব এলাকায় বন্যা হয়নি সেখানে অতিবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সবজির। এছাড়া স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর আর খুলনা, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণবঙ্গের সবজি রাজধানীতে আনা যাচ্ছে না। প্রকৃতির বৈরিতার পাশাপাশি খুচরা ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফাও সবজির আকাশ ছোঁয়া দামের অন্যতম কারণ। পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারে কেজিতে বাড়ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

আজ (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়- বাজারে পটোল, ঢেঁড়সসহ প্রায় সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। বরবটি ও বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। করলা, কচুর লতি, কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি।

বিক্রেতারা বলছেন, দুই সপ্তাহ পর দেশি টমেটো বাজারে আসতে শুরু করবে। বর্তমানে আমদানি করা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি। কাঁচা মরিচের দাম আগের মতোই ১৮০ থেকে ২২০ টাকা কেজি। বাজারে ছোট আকারের ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়। লাউয়ের পিস ৪০ থেকে ৬০ টাকা। দাম চড়া শাকের আঁটিরও। লাউশাকের আঁটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। লালশাক, মুলাশাক ২০ থেকে ২৫ টাকা। কলমিশাক ২০ থেকে ২৫ টাকা।

মিরপুর-১ নাম্বারের পাইকারি কাঁচামাল ব্যবসায়ী আজমল শেখ বলেন, বর্ষা মৌসুমে সবজির উৎপাদন কম। ফলে পাইকাররা চাহিদামতো পণ্য সংগ্রহ করতে পারছেন না। আগে একজন পাইকার একটা বাজার থেকে সবজির সব আইটেম সংগ্রহ করতে পারতেন। এখন তাঁকে পাঁচ থেকে সাতটা বাজার ঘুরতে হয়। বন্যা যদি দীর্ঘ না হতো তবে এত দিনে অনেক নতুন সবজি বাজারে আসত। দামও কমত।

শেওড়াপাড়া বাজারের সবজি বিক্রেতা হালিম বলেন, বাজারে সবজি নেই। সারা দেশে বন্যার পানিতে সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। যতটুকু বাজারে আসছে তার দাম চড়া। আমরা বাড়তি দামে কিনে বাড়তি দামেই বিক্রি করছি।

বর্তমানে প্রতি কেজি মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, মিনিকেট চাল পুরান ৫৫ টাকা, বাসমতি চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, আতপ চাল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, পোলাওর চাল ৯৫ থেকে ১০০ টাকা, গুটি চাল ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, পায়জাম চাল ৪৫ টাকা, আঠাশ চাল ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা ও এক সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা কেজিদরে।

প্রতি কেজি ডাবলি ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা, এংকর ৫০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১২০ টাকা, মসুর (মোটা) ৮০ টাকা কেজিদরে। খোলা সয়াবিন তেল (লাল) বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০৫ টাকা ও খোলা (সাদা) সয়াবিন ১০০ টাকা লিটার।

শেওড়াপাড়া বাজারে শাকিল নামে এক ক্রেতা বলেন, ঢাকা শহর এখন নিম্ন ও মধ্যবিত্তের জন্য না। এখানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে অথচ মানুষের আয় কমেছে। বাজারে জিনিসপত্রের সংকট নেই তবুও চাওয়া হচ্ছে বাড়তি দাম। আমরা বিপদে আছি। এভাবেই নিজের অনুভূতি জানান তিনি।

চিত্রদেশ//এল//

Related Articles

Back to top button