শিক্ষা

শনিবার জবির প্রথম সমাবর্তন

স্টাফ রিপোর্টার:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রথম সমাবর্তন আগামী ১১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পর প্রথমবারের মত সমাবর্তনে প্রায় ১৯ হাজার গ্র্যাজুয়েট কালো গাউন পরে উল্লাস করতে মুখিয়ে আছে। জবি প্রথম সমাবর্তন হওয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। সমাবর্তনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে পুরো ক্যাম্পাসে। সমাবর্তনের স্থান ধূপখোলা মাঠে নির্মাণ করা হচ্ছে ১ লক্ষ ৫০ হাজার বর্গফিটের বিশালাকৃতির প্যান্ডেল।

প্রায় ১৯ হাজার গ্র্যাজুয়েটের অংশগ্রহণে এই সমাবর্তনের ভেন্যুতে প্রবেশে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে শিক্ষক, অতিথি ও গ্র্যাজুয়েটদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মাঠে প্রবেশের নিয়মাবলী:
সমাবর্তনস্থলে আগতদের আমন্ত্রণপত্রটি অবশ্যই সঙ্গে আনতে হবে। প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত পরিচয়পত্র আনতে হবে। মোবাইল ফোন, হ্যান্ডব্যাগ, ব্রিফকেস, ক্যামেরা, ছাতা ও পানির বোতল বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে নেওয়া যাবে না।

প্রবেশের সময় ও আসন গ্রহণ:
গ্র্যাজুয়েট ও আমন্ত্রিত অতিথিরা ১ নম্বর গেইট দিয়ে সমাবর্তনস্থলে প্রবেশ করবেন। তাদের জন্য সকাল ১০টায় গেইট খোলা হবে। বেলা ১১টার মধ্যে অবশ্যই সমাবর্তনস্থলে আসন গ্রহণ করতে হবে। চ্যালেন্সর শোভাযাত্রা প্যান্ডেলে প্রবেশের সময় থেকে মঞ্চে আসন গ্রহণ পর্যন্ত অতিথিসহ সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী সবাই নিজ নিজ আসনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকবেন। চ্যান্সেলর সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণার পর তার শোভাযাত্রা সমাবর্তনস্থল ত্যাগ না করা পর্যন্ত সবাই নিজ নিজ আসনে অবস্থান করবেন।

চার স্তরের নিরাপত্তা:
সমাবর্তন ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকেও বিএনসিসি, রোভার স্কাউটদের প্রস্তুত করা হয়েছে।

অন্যান্য:

১৯ হাজার শিক্ষার্থীর পদচারণে ১১ জানুয়ারি পুরান ঢাকায় থাকবে বাড়তি লোকসমাগম। বাড়তি চাপ সামলাতে পুরান ঢাকা এলাকায় ভারি যান চলাচল বন্ধ করতে পারে ট্রফিক পুলিশ। এদিকে সমাবর্তনস্থলে শিক্ষার্থীদের প্রবেশের চাপ সামলাতে সকাল ৮টা থেকেই ভেন্যুতে প্রবেশ করতে পারবেন আগত গ্র্যাজুয়েটরা। বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান শুরু হবে।

এদিকে সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে। প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ভবনে রঙের কাজ করা হয়েছে। সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য লাগানো হয়েছে ফুলের গাছ। আর সমাবর্তনের স্থান (ধুপখোলার মাঠ) প্রস্তুত হচ্ছে ইতিহাস গড়ার জন্য, যেখানে প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী সমবেত হবেন ১১ জানুয়ারি।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান:
প্রথম সমাবর্তন সামনে রেখে আগ্রহের কমতি নেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীদেরও। তারাও সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে পরিচয় ও আনন্দ ভাগাভাগি করতে অধীর অপেক্ষায় আছেন। সমাবর্তনের দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের সঙ্গে জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী বাপ্পা মজুমদার মঞ্চ মাতাবেন।

যারা অংশগ্রহণ করছেন:
সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল, পিএইচডি ও সান্ধ্যকালীন ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীরা যারা অন্তত একটি ডিগ্রি জবি থেকে অর্জন করেছে তারাই অংশগ্রহণ করছে। এর মধ্যে স্নাতক ১১ হাজার ৮৭৭ জন, স্নাতকোত্তর ৪ হাজার ৮২৯, এমফিল ১১, পিএইচডি ছয় ও ইভেনিং প্রোগ্রামের ১৫৭৪ জন অংশ নেবেনে। এর মধ্যে ছেলে ১৩ হাজার ৭৬২ ও মেয়ে ৪ হাজার ৫৫৫ জন। যারা সুযোগ পেয়েও এ বছর সমাবর্তনে অংশগ্রহণ-আবেদন করেনি তারা আর কখনও সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। সমাবর্তন উপলক্ষে ১৮ হাজার ৩১৭ জন শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেট তৈরি করতে হচ্ছে। সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেয়া সমাবর্তন গাউন শিক্ষার্থীদের ফেরত দিতে হচ্ছে না।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস:
১৮৫৮ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আনুষ্ঠনিক যাত্রা শুরু করে। পরে এর নাম বদলে ১৮৭২ সালে ‘জগন্নাথ স্কুল’ করা হয়। ২০০৫ সালে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাসের মাধ্যমে এটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল স্লোগান হলো ‘শিক্ষা, ঈমান, শৃঙ্খলা’।

 

চিত্রদেশ//এস//

Related Articles

Back to top button