মেহেদী-আফ্রিদি নৈপূণ্যে ঢাকার জয়
স্পোর্টস ডেস্ক:
বিধ্বংসী ইনিংস খেলে জয়ের ভিত তৈরি করে দিয়েছিলেন মেহেদী হাসান। দায়িত্বশীল ইনিংসে সেটা পোক্ত করেন তামিম ইকবাল ও মুমিনুল হক। শেষদিকে ক্যামিও খেলে দলকে জয় এনে দিলেন শহীদ আফ্রিদি। কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা প্লাটুন। এ নিয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ৫ ম্যাচে তৃতীয় জয় পেল তারা।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সূচনাতেই হোঁচট খায় ঢাকা। রবিউল ইসলামের বলে বিদায় নেন এনামুল হক। পরে ওয়ানডাউনে নামা মেহেদী হাসানকে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠেন তামিম ইকবাল। এসে এসেই রূদ্রমূর্তি ধারণ করেন মেহেদী। ব্যাটকে তলোয়ার বানিয়ে কুমিল্লা বোলারদের কচুকাটা করেন তিনি। তাতে হু হু করে বাড়ে ঢাকার রান। পথিমধ্যে মাত্র ২২ বলে ফিফটি তুলে নেন এ অলরাউন্ডার।
তবে হাফসেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি মেহেদী। আল-আমিনের বলে ফিনিশ হন তিনি। ফেরার আগে ২৯ বলে ৭ ছক্কার বিপরীতে ২ চারে ৫৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেট জুটি বিচ্ছিন্ন হতেই বিপাকে পড়ে ঢাকা। এক ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে তাদের ধাক্কা দেন মুজিব-উর রহমান। আসিফ আলি ও জাকির আলিকে ফিরিয়ে দেন তিনি। দুজনই রানের খাতা খুলতে পারেননি।
এ পরিস্থিতিতে মুমিনুল হককে নিয়ে খেলা ধরেন তামিম ইকবাল। চাপ কাটিয়ে উঠে ধীরে ধীরে জয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। তবে হঠাৎ করে থেমে যান তামিম। সৌম্য সরকারের বলে ক্যাচ আউট হন তিনি। ফেরার আগে ৪০ বলে ৪ চারে দায়িত্বশীল ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন ড্যাশিং ওপেনার। এতে বিপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের মালিক বনে যান তামিম। ছাড়িয়ে যান মুশফিকুর রহিমকে। সব আসর মিলিয়ে বাঁহাতি ওপেনারের রান ১৯৬৯। আর মিস্টার ডিপেন্ডেবলের রান ১৯৩৬।
তামিম ফিরলেও একপ্রান্ত আগলে থেকে যান মুমিনুল। ফলে জয়ের সম্ভাবনাও থাকে ঢাকার। টার্নিং পয়েন্টে শহীদ আফ্রিদিকে হাত খুলে খেলতে সাহস জোগান তিনি। তাতে কাজের কাজটুকু করে দেন বুমবুম। শেষ পর্যন্ত ১ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে নোঙর করে ঢাকা। ২৬ বলে ১ চারে ২৮ রান করে অপরাজিত থাকেন মুমিনুল। আর ১৬ বলে ২ ছক্কার বিপরীতে ১ চারে ২৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ হার না মানা ইনিংস খেলেন আফ্রিদি। কুমিল্লার হয়ে সর্বাধিক ২ উইকেট নেন মুজিব -উর রহমান।
সোমবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেন ঢাকা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ফলে আগে ব্যাট করতে নামে দাসুন শানাকার কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। তবে শুরুটা শুভ হয়নি তাদের। ভূমিকাতেই মেহেদি হাসানের বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার।
পরে সাব্বির রহমানকে নিয়ে খেলা ধরার চেষ্টা করেন ভানুকা রাজাপাকশে। তবে সমর্থন জোগাতে পারেননি অফফর্মে থাকা সাব্বির। একই বোলারের বলে ফেরত আসেন তিনি। এরপর ডেভিড মালানকে নিয়ে দলকে টেনে তোলার প্রচেষ্টা চালান রাজাপাকশে। কিন্তু সঙ্গ দিতে পারেননি মালান। শাদাব খানের শিকার হন তিনি।
নিয়মিত বিরতিতে টপঅর্ডারের ৩ ব্যাটসম্যান হারিয়ে চাপে পড়ে কুমিল্লা। ফলে রানের চাকাও স্লো হয়ে যায় তাদের। এ অবস্থায় ইয়াসির আলিকে নিয়ে টুক টুক করে এগিয়ে যান রাজাপাকশে। অপর প্রান্ত থেকে পান দারুণ সহযোগিতা। একপর্যায়ে দুর্দান্ত খেলতে থাকেন দুজনই।
পথিমধ্যে ফিফটি তুলে নেন রাজাপাকশে। পরে স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছোটাতে থাকেন তিনি। ঢাকা বোলারদের রীতিমতো তুলোধুনো করেন বাঁহাতি ওপেনার। ধীরে ধীরে এগিয়ে যান সেঞ্চুরির পথে। মাঝে মধ্যে ঝলক দেখান ইয়াসির। ফলে লড়াকু পুঁজির পথে ছোটে কুমিল্লা।
তবে শেষ অবধি ৩ অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করতে পারেননি রাজাপাকশে। ৬৫ বলে ৭ ছক্কার বিপরীতে ৪ চারে অনবদ্য ৯৬ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন তিনি। অন্যদিকে ২৭ বলে ২ চারে ৩০ রান করে অপরাজিত থাকেন ইয়াসির। দুজনের ব্যাটে চড়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৬০ রানের পুঁজি গড়ে কুমিল্লা। ঢাকার হয়ে মেহেদি নেন সর্বোচ্চ ২ উইকেট।
চিত্রদেশ //এস//