অর্থ-বাণিজ্যপ্রধান সংবাদ

পদ্মা-মেঘনায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার:
জাটকা রক্ষা ও ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে আগামীকাল শনিবার মধ্যরাত থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে শুরু করে লক্ষ্মীপুর জেলার চরআলেকজেন্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকা হিসেবে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। এ সময় ইলিশসহ যে কোনো মাছ আহরণ, মজুত, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন করা যাবে না।

মতলব উত্তর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলায় ৫১ হাজার ১৯০ জন তালিকাভুক্ত জেলে রয়েছে। এসব জেলেদের নিষেধাজ্ঞার দুই মাস বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে সেলাই মেশিন, গবাদি পশুসহ অন্যন্যা সামগ্রী প্রদান করা হবে। এছাড়াও ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত চার মাস প্রত্যেক জেলেকে ৪০ কেজি করে চাল দেয়া হবে, যাতে করে জেলেরা জাটকা নিধন না করেন।

মতলব উত্তর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মালিক তানভীর হোসেন  জানান, জাটকা রক্ষার দুই মাসের এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষে ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। আমরা জেলে, জেলে সংগঠনের নেতা, জনপ্রতিনিধিসহ সব কমিউনিটি লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি।

তিনি জানান, নদী উপকূলীয় এলাকায় জাটকা নিধন না করার জন্য মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও ব্যানার সাঁটানো হয়েছে। দুই মাস নদীতে জেলা টাস্কফোর্স নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন। এরপরও যদি কোনো জেলে আইন অমান্য করে মাছ আহরণ করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে মৎস্য আইনে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।

মোহনপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. নাসির উদ্দিন জানান, আমরা জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, জনপ্রতিনিধি, কোস্টগার্ড ও জেলে নেতাদের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করেছি। আইন অমান্য করে জাটকা আহরণ করলে আটক করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নৌ-এলাকার সব থানা ও ইউনিটের পুলিশ নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে।

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএম জহিরুল হায়াত বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, ইলিশ দিয়েই চাঁদপুর জেলা ব্র্যান্ডিং হয়েছে। তাই এই ইলিশ রক্ষার দায়িত্ব চাঁদপুরের সিকি কোটি মানুষের। আমরা সকল শ্রেণী-পেশার লোককে নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করেছি।

তিনি জানান, জাটকা নিধনের সঙ্গে জড়িত কাউকেই কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। আমরা চাঁদপুরের বিগত দিনের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে চাই। সবার সহযোগিতা থাকলে অবশ্যই দুই মাসের এ কর্মসূচি সফল হবে।

চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য নুরুল আমিন রুহুল বলেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় গৌরব। একে রক্ষায় জাটকা ও মা ইলিশ ধরা বন্ধ করতে হবে। দেশ থেকে কারেন্ট জাল উঠিয়ে দিতে হবে। এতে শুধু দেশের মানুষের চাহিদা পূরণই নয়, বিশ্ববাসীকেও ইলিশের স্বাদ ফিরিয়ে দিতে পারবে বাংলাদেশ।

 

চিত্রদেশ//এফ//

Related Articles

Back to top button