আয়োজন

ক্রেতা টানতে পারছে না বাণিজ্য মেলা

স্টাফ রিপোর্টার:
ক্রেতা ও দর্শনার্থীর খরা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না এবারের ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। মেলা প্রাঙ্গণে প্রথম পাঁচদিনের মতো সোমবারও ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সংখ্যা বেশ কম দেখা গেছে।

ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা কম থাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অলস সময় পার করতে হচ্ছে। তবে বিকেলের দিকে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা কিছু বাড়লেও তা মন ভরাতে পারছে না অংশগ্রহণকারী স্টলগুলোর।

 

মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন স্টলে দায়িত্ব পালনকারীরা জানিয়েছেন, প্রথম দিকে সাধারণত বাণিজ্য মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা কম থাকে। যে কারণে বিক্রি হয় কম। তবে এবার অন্যবারের তুলনায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সংখ্যা বেশ কম।

শুরুতে ক্রেতা-দর্শনার্থী খরা দেখা দিলেও সামনে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করছেন মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের অভিমত, আগামী সপ্তাহ থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে বাণিজ্য মেলা জমজমাট হয়ে উঠবে।

থাই প্যাভিলিয়নে নারী সামগ্রী বিক্রি করা মিলন নামের একজন বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর ধরে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছি। প্রতি বছরের শুরুর দিকে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা কম থাকে। তবে এবার ক্রেতা-দর্শনার্থী সংখ্যা অন্যবারের তুলনায় অনেক কম। গত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে আমি বলব এবার ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা চার ভাগের এক ভাগে দাঁড়িয়েছে।’

তিনি বলেন, আমাদের স্টলে মোটামুটি ক্রেতা-দর্শনার্থী আসছেন। কিছু বিক্রিও হচ্ছে। কিন্তু এর পরিমাণ খুবই কম। গত বছর মেলার প্রথম সপ্তাহে যে বিক্রি করেছিলাম এবার তার পাঁচ ভাগের এক ভাগও বিক্রি করতে পারিনি।

ছেলেদের কোট বিক্রির স্টল দেয়া শহিদুল বলেন, মেলা শুরু থেকেই আমরা স্টলের পণ্য সাজিয়ে রেখেছি। কিন্তু ক্রেতা পাচ্ছি না। হাতেগোনা কয়েকটি পণ্য বিক্রি হয়েছে। তবে আমরা আশা ছাড়িনি। আগামী সপ্তাহ থেকেই বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছি।

তিনি বলেন, অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি বাণিজ্য মেলার মূল বিক্রি হবে শেষ দিন। এর মধ্যে মাঝের শুক্র-শনিবার ক্রেতা-দর্শনার্থীদের চাপ থাকবে। তবে গত শুক্রবার ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা তেমন দেখা যায়নি।

 

থ্রি-পিসের স্টল দিয়ে বসা আরিফুল বলেন, আজ নিয়ে মেলার ছয়দিন চলে যাচ্ছে। আমরা একটি কিছু বিক্রি করতে পারিনি। গত বছর মেলার প্রথম দিনই ৩০টির মতো থ্রি-পিস বিক্রি করেছিলাম। আমাদের ধারণা, মেলার ১০ দিন যাওয়ার পর বিক্রির পরিস্থিতি ভালো হবে। তা না হলে তো পুরোটাই লোকসানে পড়তে হবে।

আইসক্রিম বিক্রেতা সোহেল বলেন, এবার মেলার মাঠে ছাতা নিয়ে আইসক্রিমের স্টল দিতে দেয়নি। প্যাভিলিয়নের কোনায় জায়গা নিয়ে স্টল দিতে হয়েছে। এতে খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। গত বছর একটি স্টল ৪০ হাজার টাকা দিয়ে নিয়েছিলাম, এবার একটি স্টল নিতে খরচ হয়েছে ৫ লাখ টাকা। কয়েকগুণ বেশি টাকা দিয়ে স্টল নেয়া হলেও বিক্রি সেভাবে হচ্ছে না।

মেলার আয়োজক রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, এবারের মেলায় বাংলাদেশের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্ক, নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, দুবাই, ইতালি ও তাইওয়ানের প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।

মেলায় ক্রেতারা যে সব পণ্য কিনতে পারবেন তার মধ্যে অন্যতম দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিক্স অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্সস, পাট ও পাট জাত পণ্য সামগ্রী, চামড়া/আর্টিফিসিয়াল চামড়া ও জুতাসহ চামড়া জাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক সামগ্রী, মেলামাইন সামগ্রী, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ঘড়ি, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, ইমিটেশন জুয়েলারি, সিরামিকস, টেবলওয়্যার, ক্যাবল, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, আসবাবপত্র ও হস্তশিল্পজাত পণ্য, উপহার সামগ্রী, কনস্ট্রাকশন সামগ্রী, হোম ডেকর, বেকারি পণ্য, বিদেশি বস্ত্র ইত্যাদি।

 

চিত্রদেশ//এস//

 

Related Articles

Back to top button