অন্যান্য

করোনার প্রভাবে হস্তশিল্প খাতে এক মাসে ক্ষতি ৩০ মিলিয়ন ডলার!

লাবণ্য হক:

 

জাতীয় অর্থনীতিতে হস্তশিল্প গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে । বর্তমানে এই শিল্পের সঙ্গে সরাসরি এককোটি কারুশিল্পী জড়িত এবং তাদের জীবিকা এই শিল্পের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে ।

শতভাগ দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানীর মাধ্যমে বৈদাশিক মুদ্রা অর্জন করে আসছে । প্রতি অর্থ বছরে যার পরিমাণ প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলারের উপরে। এছাড়া এই শিল্পের স্থানীয় বাজারের পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা । গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ, বিশেষ করে প্রান্তিক নারীরা হস্তশিল্প উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত।

হুমকির মুখে থাকা হস্তশিল্প মরণব্যাধি করোনার কারণে আজ চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে । কারণ এ খাতের রপ্তানীকারকদের শত শত নিশ্চিত অর্ডার প্রতিনিয়ত বাতিল হচ্ছে । ইতিমধ্যেই তাদের কারখানাগুলো স্থবির হয়ে পড়েছে। হস্তশিল্পের সাথে জড়িত হাজারো উৎপাদনকারী ও রপ্তানীকারক আজ নিজেদের জীবিকা নিয়ে চরম শঙ্কার মুখে ।

বাংলাদেশ হস্তশিল্প প্রস্তুতকারক ও রপ্তানীকারক সমিতি-বাংলাক্রাফটের সভাপতি গোলাম আহসান

এ বিষয়ে বাংলাদেশ হস্তশিল্প প্রস্তুতকারক ও রপ্তানীকারক সমিতি-বাংলাক্রাফটের সভাপতি গোলাম আহসান বলেন, ‘করোনার প্রভাবে এখন পর্যন্ত আমাদের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিগত এক মাসে হস্তশিল্পে প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলার অর্ডার বাতিল হয়েছে। শুধুমাত্র কারুপণ্য রংপুর লিমিটেডের গত মাসে বাতিলকৃত অর্ডারের পরিমাণ ৫.২ মিলিয়ন ডলার । ‘স্যান ট্রেড লিমিটেড’ এর বাতিলকৃত অর্ডার প্রায় ১ মিলিয়ন ডলার এবং অব্যবহৃত মজুদ কাঁচামালের পরিমাণ প্রায় ১ কোটি টাকা । এছাড়া গোল্ডেন জুট প্রডাক্টস, এসিক্স লিমিটেড, পেবেলচাইল্ড বাংলাদেশ লিমিটেড এর ক্ষতির পরিমাণ ২ মিলিয়নের উপরে ।’

তিনি বলেন, ‘এ অবস্থায় প্রত্যেক হস্তশিল্প রপ্তানীকারকগণ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নিয়ে চরম শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে এবং ৩০-৪০ হাজার মানুষের চাকরি এখন হুমকির মুখে ।’

গোলাম আহসান আরো বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে এর প্রভার নাগালের বাহিরে চলে যাবে। যা হয়ত করোনা ভাইরাস থেকেও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে ! কারণ নিম্ন আয়ের হস্তশিল্প শ্রমিকগণ যদি তাদের চাকরি হারায় তাহলে তাদের পরিবার-পরিজন না খেয়ে মারা যাবে !’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের হস্তশিল্পের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন বাংলাদেশ হস্তশিল্প প্রস্তুতকারক ও রপ্তানীকারক সমিতি-বাংলাক্রাফট ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে লিখিতপত্রের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত করেছে । সরকার হস্তশিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের জীবন ও জীবিকার কথা বিবেচনা করে হস্তশিল্পকে বাঁচাতে দ্রুত এই খাতে বিশেষ আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা করবে বলে হস্তশিল্প রপ্তানীকারকদের দৃঢ় বিশ্বাস ।’

 

চিত্রদেশ//এল//

Related Articles

Back to top button